ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া কলেজের এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪-এর ফলাফল অত্যন্ত হতাশাজনক, যা এলাকার শিক্ষার মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠাচ্ছে। মোট ৬৭৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২৩৩ জন পাস করেছেন, আর ৪৪৩ জন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন। পাসের হার মাত্র ৩৪.৯৩%। এই ফলাফল এলাকার শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
ফলাফলের বিস্তারিত:
- মোট পরীক্ষার্থী: ৬৭৬ জন
- পাস: ২৩৩ জন
- অকৃতকার্য: ৪৪৩ জন
- GPA-5: ২০ জন
শাখাভিত্তিক ফলাফল:
- ব্যবসা শিক্ষা:
- পাস: ৫ জন
- ফেল: ১৯ জন
- GPA-5: ০ জন
- মানবিক শাখা:
- পাস: ৭০ জন
- ফেল: ৩৭৬ জন
- GPA-5: ৬ জন
- বিজ্ঞান শাখা:
- পাস: ১৩৮ জন
- ফেল: ৪৮ জন
- GPA-5: ১৪ জন
ফুলবাড়ীয়া কলেজের শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বেগ
ফুলবাড়ীয়া কলেজ, যা এই এলাকার সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত, এমন একটি ফলাফল প্রকাশ করেছে যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ও শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে মানবিক শাখায় পাসের হার অত্যন্ত নিম্নমানের (৭০ জন পাস, ৩৭৬ জন অকৃতকার্য)। বিজ্ঞান শাখায় তুলনামূলকভাবে ভালো ফলাফল (১৩৮ জন পাস, ৪৮ জন ফেল এবং ১৪ জন GPA-5) থাকলেও ব্যবসা শিক্ষায় ফলাফল আরও হতাশাজনক (৫ জন পাস, ১৯ জন ফেল)।
শিক্ষকদের ভূমিকা ও দায়:
এই হতাশাজনক ফলাফলের পিছনে শিক্ষকদের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক মনিটরিং, ছাত্রদের মনোযোগের ঘাটতি, এবং মানসম্মত শিক্ষা প্রদান না করায় এই ধরনের ফলাফল দেখা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
করণীয়:
কলেজের এই অবস্থা থেকে উত্তরণে শিক্ষার মান উন্নয়নে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে:
- শিক্ষার মান উন্নয়ন: প্রতিটি বিভাগের শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সাপোর্ট সেশন আয়োজন করা।
- মনিটরিং ব্যবস্থা: ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা নিয়ে যথাযথ মনিটরিং এবং বিশেষ প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদা কোচিং ব্যবস্থা।
- ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং: শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এবং মোটিভেশনাল সেশন।
- পরীক্ষা প্রস্তুতি: পরীক্ষার আগে প্রতিটি বিষয়ের উপর বিশেষ কোচিং এবং রিভিশন ক্লাসের আয়োজন করা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব:
এই ফলাফল ফুলবাড়ীয়া কলেজের জন্য একটি সংকেত, যে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে শিক্ষার মান আরও নিচে নেমে যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের দ্রুত এগিয়ে এসে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে, যেন ফুলবাড়ীয়া কলেজ আবারও একটি মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।