সর্বশেষ সংবাদ
Own Post
প্রকাশিত: 01:48:32 am, 2020-12-02 | দেখা হয়েছে: 4 বার।
বিশেষ সংবাদদাতা: সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চর সলিমাবাদ গ্রামের পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অসময়ে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের তাণ্ডবে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
স্কুলটি রক্ষায় ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুত বালুর বস্তা দিয়ে ডাম্পিং করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে যে কোনো মুহূর্তে স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে ওই স্কুলে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক জাহাঙ্গীর ফকির, মজিবর রহমান, বাবুল আক্তার ও নেক মোহাম্মদ জানান, এ এলাকার মানুষ নদী ভাঙনে নিঃস্ব, অসহায় ও হতদরিদ্র।
তাদের পক্ষে পয়সা খরচ করে দূরের স্কুলে ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা করানোর সামর্থ্য নেই। স্কুলটি ভেঙে গেলে তাদের ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে। এ কারণে স্কুলটি ভাঙন থেকে রক্ষা করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম হোসেন জানান, এ বিদ্যালয়টিতে ৪টি গ্রামের নদী ভাঙন কবলিত হতদরিদ্র পরিবারের ১০৯ জন ছেলে মেয়েরা পড়ালেখা করে। আশপাশে আর কোনো স্কুল নাই। তাই এ স্কুলটি তাদের একমাত্র ভরসা। এদের মানবিক বিষয় বিবেচনা করে স্কুলটি রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এই শিক্ষক বলেন, স্কুলটির সামনের ভাঙন কবলিত স্থানে কিছু বালুর বস্তা ফেলে ডাম্পিং করা হলে এ বছর স্কুলটি রক্ষা করা সম্ভব হবে। বিষয়টি চৌহালি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় যে কোনো মুহূর্তে স্কুলটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে চৌহালি উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী বলেন, এ বিদ্যালয় সহ চৌহালি উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম যমুনা নদী ভাঙনের মুখে পড়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। অথচ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে চৌহালি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, বিষয়টি আমি চৌহালি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়কে জানিয়েছি। তিনি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন।
কিন্তু তারা এখনো কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্কুল ঘরটি ওই স্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে আপাতত নিরাপদ স্থানে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে জমি পেয়ে সেখানে ঘরটি তুলে স্কুলের কার্যক্রম চালানো হবে। এ সময় পর্যন্ত একটি মালিকানাধীন জায়গায় স্কুলের কার্যক্রম চালানো হবে।
চৌহালির ভাঙন রোধে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে জানিয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, তারা এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা তারাই ভালো বলতে পারবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভাঙন রোধে অচিরেই ওই এলাকায় জিওটেক্স বালুর বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে। এ ছাড়া ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেওয়া আছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।