Image Not Found!
ঢাকা   ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ

  ফ্যাসিস্ট জালিম সরকারের দোসররা এদেশে রয়ে গেছে- মামুনুর রশীদ (108)        নবগঠিত নেতৃত্বে বিএনপির উজ্জীবিত অগ্রযাত্রা (108)        ফুলবাড়ীয়ায় সাপ্তাহিক ফুলখড়ির ১৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎযাপন (108)        ফুলবাড়ীয়ায় যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত (108)        গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ তিনজন অব্যাহতি (2)         জনগণের আকাঙ্ক্ষা বুঝেছি,বঙ্গভবনের সামনে আন্দোলনের প্রয়োজন নেই (2)        ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় নিয়ে জামায়াতের রিভিউ আবেদন, ২৪ অক্টোবর শুনানি (5)        ময়মনসিংহে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের মৃত্যু (2)        স্বর্ণের দাম বাড়ছে, এক বছরে বেড়েছে ৩৫% (2)        ফুলবাড়ীয়ায় ক্রমবর্ধমান যানজট: দ্রুত সমাধানের আশ্বাস" (2)      

ইকবালই সেদিন মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়েছিল।

নিজস্ব প্রতিনিধি:

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকবাল সেদিন সরাসরি হামলায় অংশ নিয়েছিল। তথ্য জানিয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, হামলার সময় সে মঞ্চের উদ্দেশ্যে গ্রেনেড ছুড়ে।

মঙ্গলবার(২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব মহাপরিচালক।

র‌্যাব ডিজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আত্মগোপনে থাকাকালীন কখনও নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক, রিকশা মেকানিকের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন ইকবাল। তবে র‌্যাব জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার উপর্যুপরি অভিযান গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে ২০০৮ সালে দেশ ত্যাগ করেন তিনি। প্রথমেসেলিমএবং পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর নাম ধারণ করেন।

তিনি বলেন, ইকবাল মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রবাসে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর ২০২০ সালের শেষের দিকে অন্যদের মতো তাকেও দেশে ফেরত পাঠানো হয়। সর্বশেষ গতরাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।

র‌্যাব বলছে, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই) এর সহযোগিতায় র‌্যাবের একটি দল রাজধানীর দিয়াবাড়ী এলাকা থেকে সোমবার দিবাগত রাত তিনটায় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘৃণিত, কলঙ্কজনক বিভীষিকাময় একটি দিন। সেদিন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘৃণ্যভাবে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত; তিনি বেঁচে যান। আলোচিত গ্রেনেড হামলায় শাহাদত বরণ করেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভী রহমানসহ দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকেই এখনও সেই দুঃসহ এবং বিভীষিকাময় স্মৃতি ক্ষত বয়ে চলেছেন।

ইকবালকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র‌্যাব ডিজি বলেন, জঙ্গি ইকবালের বাবার নাম আব্দুল মজিদ মোল্লা। তার বাড়ি ঝিনাইদহে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। স্কুল-কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় সে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিল।

সে ১৯৯৪ সালে ঝিনাইদহের কেসি কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত শ্রেণি প্রতিনিধি ছিল বলে জানিয়েছে। ইকবাল ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় প্রবাসী কর্মজীবী হিসেবে অবস্থান করে। দেশে ফিরে এসে জঙ্গি ইকবাল আইএসডি ফোন এবং অন্যান্য ব্যবসা পরিচালনা করে।

তিনি আরও বলেন, ‘ইকবাল দেশে অবস্থানকালে সর্বহারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে বিরোধ-কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে এবং ২০০১ সালে তার চিন্তা-চেতনায় একটা মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন আসে। সে ঝিনাইদহের এক স্থানীয় জঙ্গি সদস্যের মাধ্যমে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশে যোগদান করে। ২০০৩ সালে সে মুফতি হান্নান অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সান্নিধ্যে আসে এবং জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে থাকে।

র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘২০০৪ সালের আগস্টে মুফতি হান্নানের নির্দেশে ঢাকায় আসে এবং গোপন আস্তানায় অবস্থান করতে থাকে। সেখানে হুজিবি নেতা মুফতি হান্নানসহ অন্যান্যদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করে। সে মুফতি হান্নানের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠকে অংশগ্রহণ করত।

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার বিষয়ে সে জানায়- মুফতি হান্নানের নির্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সে সরাসরি অংশগ্রহণ করে। হামলা পরিচালনার জন্য মুফতি হান্নান তাকে গ্রেনেড সরবরাহ করে ছিল বলে সে উল্লেখ করেছে।

হামলার সময় সে মঞ্চকে উদ্দেশ্য করে গ্রেনেড ছোঁড়ে। ঘটনার পর সে ঝিনাইদহে গিয়ে আত্মগোপন করে।

ইকবালকে গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় জানিয়ে র‌্যাব ডিজি বলেন, ২০০৮ সালে জঙ্গি ইকবালকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ঝিনাইদহে তার নিজ বাড়িতে, পরবর্তীতে গাজীপুর, সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আত্মগোপনে থাকাকালে সে (ইকবাল) নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক, রিকশার মেকানিক ইত্যাদি ছদ্মবেশ ধারণ করে ছিল বলে সে জানায়।

তিনি আরও বলেন, র‌্যাবের অভিযানের কারণে সে ২০০৮ সালে দেশ ত্যাগ করে। প্রবাসে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় প্রথমে সেলিম নাম ধারণ করে। এক পর্যায়ে সে প্রবাসে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে ২০২০ সালের শেষের দিকে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফেরত এসে ইকবাল আত্মগোপনে থেকে সমমনাদের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করে।

র‌্যাব ডিজি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এবং র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা জঙ্গি ইকবাল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। উল্লেখ্য ঐ হামলায় আহত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েক শত নেতা-কর্মী।